টানা বর্ষণে ফুলবাড়ী-বড়পুকুরিয়ার রাস্তাঘাট পানির নিচে

প্রকাশঃ আগস্ট ১২, ২০১৭ সময়ঃ ৬:৫৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৭:২৫ অপরাহ্ণ

মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

গত ৩ দিনের মাঝারী ও ভারী বর্ষণে এবং বড়পুকুরিয়া খনির ভূমি অবনমন হয়ে তলিয়ে গেছে। প্রায় ৩ ফিট পানির নিচে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী-বড়পুকুরিয়া সড়কটি। ফলে চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বড়পুকুরিয়া এলাকাসহ ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। একইসাথে ৪টি গ্রামের শিক্ষার্থীরা বড়পুকুরিয়া বাজারে অবস্থতি স্কুল, কলেজ মাদ্রাসায় যেতে বিড়ম্বনায় পড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি গতকাল শনিবার পর্যন্ত হওয়ার ফলে বড়পুকুরিয়া বাজার থেকে দক্ষিণ দিকে প্রায় আধাকিলোমিটার রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ঐ রাস্তায় চলাচলকারীরা জানায়, ভারী বর্ষণ ও খনির কারণে ভূমি অবনমন হওয়ায় এই রাস্তাটি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেক জায়গা আবার খালাখন্দে পরিণত হয়েছে। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে বড়পুকুরিয়ার পাতিগ্রাম, জিয়াগাড়ী, পাথরাপাড়া, বাঁশপুকুর, শিবকৃষ্ণপুর, হামিদপুর, ধুলাউদাল, পলাশবাড়ী, কাজিপাড়, সর্দারপাড়াসহ ১০ গ্রামের মানুষকে। এসব গ্রামের মানুষ তাদের নিত্য প্রয়োজনে প্রতিদিনই ফুলবাড়ীতে আসা যাওয়া করতে হয় এই রাস্তা দিয়ে। কিন্তু রাস্তাটির এমন অবস্থার কারণে বিপাকে পড়েছে তারা। একইসাথে তারা বলছে যদি এ ধরনের বৃষ্টি চলতে থাকে তাহলে রাস্তাটি দিয়ে আর চলাচল করা যাবে না। যদি নিতান্ত যেতেই হয় তাহলে ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে তবেই ফুলবাড়ী আসতে হবে।

এদিকে বৈগ্রাম, কাশিয়াডাঙ্গা, রসুলপুর ও মোবারকপুর গ্রাম থেকে অনেক শিক্ষার্থীই ঐ রাস্তা দিয়ে বড়পুকুরিয়া বাজারে অবস্থিত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যায়। তাই রাস্তাটি চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা ভীষণ বিপাকে পড়বে বলে এলাকাবাসীর মতামত।

হামিদপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মন্ডল বলেন, হামিদপুর ইউনিয়নটি পার্বতীপুর উপজেলার অর্ন্তগত হলেও ভৌগলিক কারণে ফুলবাড়ী পৌর শহরের একেবারে সন্নিকটে। যা ফুলবাড়ী শহর থেকে মাত্র ৩কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত। যার কারণে এই ইউনিয়নের বাসিন্দারা হাট-বাজারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য ফুলবাড়ী পৌরশহরের উপর নির্ভরশীল। আর এই সড়কটি হচ্ছে এই এলাকার যাতায়াতের প্রধান সড়ক। এই সড়কটি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় হামিদপুর ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি সুত্রে জানা গেছে, খনির কারণে ভূমি অবনমন হওয়ায় গত ২০১১ সালে বড়পুকুরিয়া বাজারসহ ঐ এলাকাটির সাড়ে ৬শ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তাটি এখন পর্যন্ত স্থানান্তর করা হয়নি। ফলে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে এলাকাবাসী রাস্তাটি অতিসত্তর মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানিয়েছেন। এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, এই জায়গাটির কিছু অংশ অধিগ্রহন করলেও এলাকাবাসীর যাতায়াতের জন্য আলাদা কোনো রাস্তা করা হয়নি। ফলে এই রাস্তা দিয়েই তাদেরকে প্রতিদিনই চলাচল করতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা বলেন, রাস্তাটি একটু বৃষ্টি হলেই পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে নিত্যপ্রয়োজনে যাতায়াত করা চরম অসুবিধার সৃষ্টি হয়। রাস্তাটি খয়েরপুকুর হাট দিয়ে ফুলবাড়ী থেকে বদরগঞ্জ উপজেলার একটি সংযোগ সড়ক। ফলে এ রাস্তা দিয়ে ফুলবাড়ী পার্বতীপুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে।

বিষয়টি নিয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটিডের এমডি প্রকৌশলী মো. হাবিব উদ্দিন এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, রাস্তাটি মেরামতের জন্য এলাকাবাসী আমাদের কাছে ইতিপূর্বে খনি রাবিশ চেয়েছিল; যা দিয়ে আমরা রাস্তাটি মেরামত করে দেই। বর্তমানে খনিতে রাবিশ না থাকায় এই সমস্যা। তাছাড়া রাস্তাটি নিয়ে স্থায়ী সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা ইতোমধ্যেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে জানিয়েছি এবং দ্রুত যাতে এই সমস্যার সমাধান হয় সেই চেষ্টা করছি।

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G